Wednesday, October 2, 2019

ফাতাবুয়াই

"সাদা রং.....কারেন্টে চলে.....পানি ঠান্ডা বরফ ওইযায়.....নাম বুলে......"... হাসির চোটে আমাদের বাড়ির সাহায্যকারীনি ফাতাবুয়াই কথাই শেষ করতে পারেন না। শেষে অতি কষ্টে হাসি চেপে বাবাকে জানালেন, বড়বাবুর বাড়ির আজব জিনিসটা নিয়ে - "..... নাম বুলে ফিরুজ"।

(আড়াই -তিন দশক আগের স্মৃতি)

Monday, April 1, 2019

রুদালি

"ও আল্লা ইতা কিতা করলায়........ও "রিমু" দেখিয়া যা, দেখিয়া যা.....তর বাফর মরার খবর হুনিয়া আমার বাড়ির বুড়া, ভালা একগু সার্টও পিনদিছেনা; অাতর (হাত) সামনে ওউ দাগ ফরা, চিতরি ফরা পানজাবি ওগু পিনদিয়া আইছে...হায় আল্লা ইতা কিতা করলায়....... " (পৌনঃপুনিক, খালি কোটমার্কে নামটা বদলাতে থাকবে)।

[ ১) তিনদশক আগে, গ্রামের একজন মারা যাওয়ার পর, আরেকজন পৌঢ়ার বিলাপ। অবশ্যই আবেগটা বিশুদ্ধ, কিন্তু শোকপ্রকাশেরও একটা প্রতিযোগীতা ছিল।
২) যারা বরাক উপত্যকার নন, তারা বুঝতে পারবেন না ]

Thursday, January 31, 2019

ভোটের স্মৃতি

নয় দশকের দ্বিতীয়ার্থে এ জি পি প্রার্থীর হয়ে প্রচারে আমাদের ক্লাবের অনেকের সাথে আমিও ছিলাম| অগপ ভাল দল, তা নয়| প্রার্থী অশিক্ষিত ও গুন্ডাপ্রকৃতির ছিল কিন্তু ওর বক্তব্য ভাল লেগেছিল| কংগ্রেস প্রার্থী শিক্ষিতই ছিলেন কিন্তু কাছাড়ের বড় অংশের মুসলমান-কংগ্রেস নেতাদের মত, উনারও USP ছিল "রানা দেবে ভালা পাইন" বা "রানা দেবর কাছের মানুষ"| আর বিজিপি তখন গ্রাম কাছাড়ে দল হিসাবে ততটা শক্তিশালী ছিল না|

আমাদের মূল প্রতিপক্ষ ছিলেন নির্দল একজন কোটিপতি ব্যবসায়ী| ভোটের আগে, আশেপাশের সব গ্রামের ক্লাব গুলোতে খেলাধুলার সামগ্রী বা পিকনিকের খরচ জুগিয়েছেন দাদা - কাজেই নির্দল বলে তিনি হেলাফেলার প্রার্থী ছিলেন না|

বন্ধুদের মতে, আমি নাকি ভাল পোস্টার লিখতে পারি| লোকসভায় কম: নুরুল হুদাকে ভোট দেওয়ার পোস্টার কিছু বানিয়েছিলাম তাতে বয়লাঢিলা খনি বিক্রি নিয়ে প্রতিবাদ করে একটা ছড়া ছিল, ভুলে গেছি, কিন্তু বিধানসভার ভোটের পোস্টারের কথা বেশ মনে আছে| একটা ছিল:
"পেট্টোল টাঙ্কির ভিতরে;
শরাব পাচার কে করে?"
যারা আইজল রোড আর মিজোরামের সাথে পরিচিত নন, তারা বুঝতে পারবেন না এর মানে| মিজোরাম কয়েকবছর আগে "ড্রাই" রাজ্য ঘোষণা করা হয়েছে| আর তখন শিলচরে যে মদের বোতল একশো টাকা সেটা লুকিয়ে মিজোরামে নিয়েযেতে পারলে তিনশো টাকায়ও বিক্রি হত| "ড্রাই রাজ্য" মিজোরাম অনেকের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছিল, এর মধ্যে ছিলেন...যাকগে|

ভোটে অগপ জিতে ছিল| দাদাও আর নির্দল থাকেন নি| ভোটের পর দাদা একসর্বভারতীয় দলের কাছাড় কমিটির সভাপতি হয়ে ছিলেন - এখন অবশ্য সরাসরি রাজনীতিতে নেই|

Wednesday, January 30, 2019

বৃষ্টি না কান্না

আমার পরিচিত, আশেপাশের যারা সচ্ছল, তাদের প্রায় সবার শিশুসন্তান দেখাশোনা করার জন্য বাড়িতে ছিল/আছে আরেক শিশু শ্রমিক| একশিশুর জন্য বলিপ্রদত্ত আরেক শৈশব - এই সামান্য ব্যাপার আরকি| সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস অনেকসময় চোখ বন্ধ রাখতে সাহায্য করে| যেমন অনেকেই বলেন - "আল্লার হুকুম, কার রিজেক (অন্ন) কার ঘরে সেটা তিনিই ঠিক করে রেখেছেন"| না, কারোর বিশ্বাস ভুল কি ঠিক সেটা বলা আমার উদ্দেশ্য নয়| 
বেশ কয়েকবছর আগে এক আত্মীয়ের বাসায় শুয়ে আছি, শীতের সকাল| পাশের বাসা থেকে একটা শিশুর কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম - কান্নাটা অবশ্য কোনো বিপদের নয়, একটানা মনোটোনাস| মালকিনরা পরিচিত, জানলাম চর অঞ্চলের শিশুটির রিকশাচালক বাবা কয়েক মাস পর পর এসে শিশুটির শ্রমের তিন চারশো টাকা নিয়ে যায় | বাপজানের চলে যাওয়ার সময় শিশুটিও ভাবে এবার বাড়ি যাব, কিন্তু বোকাটা জানে না, মালকিনের ঘরটাই ওর ঘর| বাবাটাও চুপি চুপি, দেখা না দিয়ে পালায়| তারও চোখের কোন ভেজা থাকে|
আজ সকালে বৃষ্টির জন্য দেরি করে উঠেছি| অধোঘুমের ঘোরে একটানা একটা কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম| বৃষ্টির আওয়াজে নিউরোন কোষ পুরোনো কোনো সিগনালকে উদ্দীপিত করে থাকবে|


২৭ জানুয়ারী ২০১৯